শাহাদাত হোসেন নোবেল, খুলনা প্রতিনিধি: খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবার নামে অমানবিক চিকিৎসা বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে পথেরবাজার সার্জিক্যাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (১ জুলাই) দুপুরের দিকে দিঘলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাংশু বিশ্বাসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ক্লিনিকের সঙ্গে অবৈধভাবে পরিচালিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ ছিল, রোগীদের সিজারিয়ানসহ নানা ধরনের অপারেশন করা হচ্ছে ক্লিনিকে ভাড়া (অন-কল) করা চিকিৎসক দিয়ে। চিকিৎসকদের দিয়ে শুধু অস্ত্রোপচার করিয়ে নিয়ে বাকি কাজ করেন ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা। অথচ ক্লিনিকের সামনে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ব্যবহার করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। যার বেশিরভাগ চিকিৎসক ক্লিনিকে আসেন না। এমনকি, চিকিৎসকের জাল স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করেন সেখানকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাম ম্যানেজার এস কে নূর মোহাম্মদ। তিনি নিজে চিকিৎসক সেজে চিকিৎসা দেন বলেও অভিযোগ ছিল। এভাবেই সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছিল পথেরবাজার সার্জিক্যাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দিঘলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাংশু বিশ্বাস বলেন, শুধুমাত্র ক্লিনিকের অনুমোদন নিয়ে পথেরবাজার সার্জিক্যাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু সেখানে অবৈধভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম চলছিল। এ ছাড়াও রোগীদের সঠিক সেবা প্রদান না করা এবং ডাক্তারদের নামের সাইনবোর্ড থাকলেও কর্মরত না থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে ২৮ এপ্রিল ডাক্তার ফারজানা খানম খুলনা সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।চিকিৎসকের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ই মে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন খুলনা সিভিল সার্জনের দপ্তরে দাখিল করেন। তদন্তে সত্যতা পেলেও শুধুমাত্র “সতর্ক” করা হয়েছিল ।
স্বাস্থ্য সেবার নামে এ প্রতিষ্ঠানটি ডাক্তারের স্বাক্ষর জাল ও সিল ব্যবহার করে রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করেছেন। ক্লিনিকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিজেই চিকিৎসক সেজে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ সবই করে থাকেন এস কে নূর মোহাম্মদ। এতসব অভিযোগের পরও পথের বাজার সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি কিছু নামধারী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে স্বার্থান্বেষী একটি মহল নির্দ্বিধায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছিলেন।