মোঃ মাসুম সরদার,খুলনা: খুলনা নগরীর শেরেবাংলা রোডে দোতলা বাড়ির মালিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও তাঁর চার ভাই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাড়িটি পরিচিতি পায় ‘শেখ বাড়ি’ হিসেবে। গত প্রায় ১৬ বছর ধরে, বিশেষ করে গত ৬ বছর ধরে বাড়িটি খুলনায় ‘ক্ষমতার ‘ হিসেবে পরিচিত। আলোচিত সেই বাড়িটিতে রোববার ৩ দফায় ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও বাড়ির মালামাল লুট করে বিক্ষুব্ধরা। গতকাল সোমবার আবারও ২ দফা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর বাড়িটি এখন ধ্বংসস্তূপ।
ফেসবুক লিংক দেখুন https://www.facebook.com/profile.php?id=61561797107011&mibextid=ZbWKwL
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার দুপুর ১টার দিকে বিক্ষুব্ধরা লাঠিসোটা নিয়ে গেট ভেঙে শেখ বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ব্যাপক ভাঙচুর এবং বাড়ির নিচতলা ও দোতলায় অগ্নিসংযোগ করলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কিংবা পুলিশ সেখানে যায়নি। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর কিছুসংখ্যক পুলিশ ও এপিবিএন সদস্য এবং যুবলীগের কিছু নেতাকর্মী ওই বাড়িতে যায়। যুবলীগের নেতাকর্মীরা কিছু সময় অবস্থানের পর চলে যায়।
আবারও ওই বাড়িতে হামলা চালায়, তাদের ধাওয়ায় পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। তারা ভাঙচুর করে চলে যায়। পরে সন্ধ্যায় আরেক দফা হামলা চালিয়ে বাড়ির কিছু মালামাল নিয়ে যায়। এ ছাড়া বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
ইউটিউব লিংক দেখুন https://www.youtube.com/@ebnews24
সরেজমিন সোমবার বেলা ১১টায় শেখ বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, উৎসুক কিছু লোকজন তাকিয়ে বাড়ির অবস্থা দেখছেন। বাড়িতে সংসদ সদস্য শেখ হেলালের পরিবারের কেউ নেই। ২-৩ জন কর্মচারী বাড়িতে রয়েছেন।
অথচ গত ১৬ বছর খুলনায় ঠিকদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ, চাকরিতে নিয়োগ ও বদলি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্রীড়াঙ্গনসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ হতো এই বাড়ি থেকে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো এমনকি পেশাজীবী সংগঠনগুলো চলতো এই বাড়ির নির্দেশনায়।
বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যারাই খুলনায় বদলি হয়ে আসতেন তারাই হাজিরা দিতেন শেখ বাড়িতে।
তাঁর ভাই সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বাবু কখনও ঢাকায় কখনও খুলনার বাড়িতে থাকতেন। সেই বাড়ি এখন পুরোপুরি পোড়া বাড়ি।
অথচ সেই বাড়ির এই অবস্থা দেখে সবাই অবাক হচ্ছে। কেউ কেউ বলেন, এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় বাড়ির ভেতরে ও বাইরে অনেক লোক দেখতাম। সাধারণ মানুষও বাড়ির গেটের মধ্যে ঢুকতে পারত না।