ডুমুরিয়া(খুলনা)প্রতিনিধি: একটানা বৃষ্টি ও পাশ্ববর্তী কেশবপুর উপজেলার পানি প্রবেশের কারণে, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিল বাদুড়িয়াসহ ২৭টি বিলে থৈ থৈ করছে পানিতে।
উঁচু আবাদ যোগ্য জমিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে আমন ধানসহ বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকলেও নেই কোন নিষ্কাশনের উদ্যোগ। ফলে কৃষক কূল দারুণ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। ঘোষড়া গ্রামের নূরুল ইসলাম জানান বিল বাদুড়িয়া অঞ্চল সমূহ স্থায়ী জলাবদ্ধ এলাকা একটি মাত্র ইরি বোরো ফসল কৃষকের ঘরে ওঠে এবং উঁচু জমিতে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু টানা বৃষ্টি ও পাশ্ববর্তী উপজেলার পানির চাপে ফসলী ক্ষেত তলিয়ে গেছে। কৃষকের নেই কোন কাজ। তারা বেকার হয়ে পড়েছে। সরেজমিন দেখা যায় ২৭টি বিলের পানি নিষ্কাশনের একটি মাত্র পথ ডুমুরিয়া উপজেলার নূরানিয়া স্লুইজ গেইট। পরচক্রা হইতে নরনিয়া পর্যন্ত চুকনগর ভদ্রা নদীর সংযোগ খালটি জমি থেকে উঁচু এবং গেটের সম্মুখ ভাগ পলি ভরাট রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে স্লুইজ গেট দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ রয়েছে। এ যেন দেখার কেউ নেই। উল্লেখ্য, বিল গুলি হচ্ছে আটলিয়া, নরনিয়া, কাঞ্চনপুর, বেতাগ্রাম, ঘোষড়া, শিরাশুনি, হিজেলডাঙ্গা, ভবানীপুর, বাউশলা, পরচক্রা, লালপুর, বিদ্যানন্দকাটি ও পাঁচপোতা। এই সমস্ত এলাকার পানি নরনিয়া স্লুইজ গেইট দিয়ে ভদ্রা নদীতে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু স্লুইজ গেটের পানি প্রবাহ পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি কমিটির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাশেম আলী ফকির জানান বিল বাদুড়িয়ার ৫৪টা গ্রামের পানি নিষ্কাশন পথ একমাত্র ভরসা নরনিয়া স্লুইজ গেট। এটি দুই অংশে বিভক্ত। একটি উঁচু জমি অপরটি খুব নিঁচু জমি। এর ভিতর থেকে আঠন্ডা গ্রামের অঞ্চল সমূহের পানি নেমে চিহ্নিত জলাবদ্ধ এলাকায় ঢুকে পড়ে। ফলে নিঁচু এলাকা বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর একমাত্র উপায় চুকনগর ভদ্রা নদী ও নরনিয়া কাটাখাল পূনঃ খনন পূর্বক জোয়ার ভাটা চালু করা। স্লুইজ গেইট নিয়ন্ত্রক তুহিন খান জানান গেটের সম্মুখ ভাগ পলি ভরাট হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ভদ্রা নদীর ভেরচীর নিমতলায় নদীর আড়াআড়ি ভেড়ি বাঁধের কারণে ঠিকমতো পানি প্রবাহিত হতে সমস্যা হচ্ছে।
স্লুইজ গেট থেকে ভদ্রা নদীতে পানির স্তর বেশি থাকার কারণে স্লুইজ গেইট দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের দাবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিন তদন্ত পূর্বক গেইটটি সচল করে দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা না হলে অন্য উপজেলার পানি প্রবেশ ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে চিহ্নিত জলাবদ্ধ এলাকার বাড়ির আঙ্গিনায় পানি প্রবেশ করে কয়েকটি গ্রামে জলাবদ্ধতার আশঙ্খা রয়েছে।