সাকিব হোসেন,পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালী আদালতে মামলায় হাজিরা দিতে আসা এক যুবককে আদালত চত্বর থেকে তুলে নিয়ে মারধর ও হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে জেলা জজ আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার যুবকের নাম সোহাগ মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গামরতলা গ্রামে। তিনি নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়ার ছোট ভাই। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোহাগ মিয়াকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে বলে তাঁর স্বজনেরা জানিয়েছেন
ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া দৈনিক ইবি নিউজ ২৪ কে বলেন, পুরোনো একটি মামলায় কলাপাড়ার ১০ থেকে ১২ জন আজ আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে তাঁর ভাই সোহাগও ছিলেন। দুপুরে জেলা জজ আদালত চত্বর থেকে কে বা কারা তাঁর ভাইকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হাঁটুতে হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। পরে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য তাঁকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেন। এরপর আমতলী থেকে তাঁকে উদ্ধার করে তাঁরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে ভুক্তভোগী সোহাগের মুঠোফোন নম্বরে কল করলে তাঁর স্ত্রী ধরে বলেন, তাঁর স্বামী হামলার শিকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে ঢাকা নেওয়া হচ্ছে। এখন তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি একটি মামলার কাজে আদালতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ আদালত চত্বরে মারধর চলতে দেখেন। পরে তাঁদের মধ্য থেকে একজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কারা ছিলেন, জানতে চাইলে তিনি চেনেন না বলে জানান।
সোহাগ মিয়ার আইনজীবী শংকর লাল কর্মকার দৈনিক ইবি নিউজ ২৪ কে বলেন, কলাপাড়ার একটি রাজনৈতিক মামলায় গত ২৩ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান আসামিরা। উচ্চ আদালত আসামিদের ছয় সপ্তাহের মধ্য নিম্ন আদালতে হাজির হতে বলেন। এ জন্য আজ দুপুরে আসামিরা জেলা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। তিনি এজলাসে ছিলেন। আদালতের সামনে ঝামেলার কথা শুনেছেন। বিস্তারিত কিছুই জানেন না। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানও একই কথা জানিয়ে বলেন, আদালত চত্বরে ঝামেলার কথা শুনেছেন। তিনি তখন আদালতে ছিলেন।
আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক শামসুর রহমান বলেন, তাঁরা মূলত আদালতের ভেতরের বিষয়গুলো দেখেন। কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানেন না। পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, আদালত চত্বরে একটি ঘটনা শুনে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি। এরপর একটি নম্বর সংগ্রহ করে জানতে পারেন, তিনি (আহত ব্যক্তি) আমতলীতে চলে গেছেন। পরে আর এ ব্যাপারে আপডেট জানার সুযোগ পাননি।