রানা ইসলাম,বদরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরে বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়ন ভুমি কর্মকতার কার্যালয়ে ভূমি সংক্রান্ত পরমর্শ নামজারি আবেদন,জমিরবখাজনা রশিদসহ ভূমির যাবতীয় সেবা দিয়ে থাকেন অফিস পিয়ন হাসান শাহরিয়া সুমন।আর এসব কাজের বিনিময়ে গুনে গুনে ঘুষ আদায় করেন তিনি।
টাকা গুনে নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিক কাছে এলে সুমনের ঘুষ নেওয়ার কুকর্ম ফাস হলে বিপাকে পড়ে যায় সুমন।জাকিরুল নামে এক ব্যক্তি বলেন,ভাই আমি কি আর বলবো কষ্টের কথা।আমার ক্রয়কৃত জমি খারিজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে পিয়ন সুমন আমার সঠিক কাগজপত্র দেখে বলে আপনার কাগজ সংশোধন করা লাগবে। এজন্য ৫হাজার টাকা লাগবে। টাকার জন্য আমাকে নানাভানে হয়রানি করে।তারপর ৫হাজার টাকা ঘুষ দিলে আমার জমি খারিজ হয়।আর এটাকার ভাগ বসান তশিলদার আনোয়ারুল ইসলাম।পিয়ন সুমন আর আনোয়ারুল টেবিল পাশাপাশি তারপরও সুমন অপকর্মে এই কর্মকতা বাধা দেয়না।কারন ঘুষের অর্ধেক ভাগ যায় আনোয়ারুল পকেটে।
লোহানীপাড়ার মালতলা গ্রামে মেহেরুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘ দিন আমার জমির খারিজের ফাইল পিয়ন সুমন আটকে দিয়েছে টাকার জন্য। তারপর তার পিড়াপিড়িতে ১০হাজার মতো টাকা দিলে আমার জমির খারিজ হয়।এটাকা ভাগ বসান তহশিলদার আনোয়ারুল।
গত ১৬জুলাই ঔ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকতা আনোয়ারুল ইসলাম অফিসে হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন।সেই টেবিলের পাশে বসে ভূমির যাবতীয় সেবা দিচ্ছেন পিয়ন সুমন।
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান ভূমির যাবতীয় সেবা অনলাইনে।হাতে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বিভিন্ন ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন,অনলাইন সেবা হলেও ঔ পিয়ন মাধ্যমে অনলাইন সেবা কেউ না নিলে তাকে নানাভাবে হয়রানি শিকার হতে হয়।জমির নামজারি আবেদন কেউ বাইরে করলে সেই কাগজপত্র আটকে রেখে দিনের পর দিন সেবা নিতে এসে মানুষকে ঘুরাতে থাকেন।বাধ্য হয়ে মানুষ তার অফিস পিয়ন সুমনকে ঘুষ দিয়ে নামজারির আবেদন করেন।সরকারিভাবে প্রতিটি নামজারির জন্য ১হাজার ১৫০টাকা হলেও পিয়ন সুমন নিয়ে থাকেন ৫থেকে ৬হাজার টাকা।
লোহানীপাড়ার ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা হুমায়ন কবির
বলেন,সম্প্রতি আমার নিজের একটি আবেদন করতে পিয়ন সুমন ২হাজার টাকা ঘুষ নেন।এই পিয়ন সুমন তশিলদারের যাবতীয় কাজ করে থাকেন।কর্মকতা আনোয়ারুল এর মাধ্যমে ঘুষ নেন।একেকটি নামজারি করতে ৫থেকে ৬হাজার ঘুষ নেন পিয়ন সুমনের মাধ্যমে।
অভিযোগে বিষয়ে সুমন পিয়ন সুমন বলেন,আমি কারো কাছে কোন প্রকার ঘুষের টাকা নেইনা।অফিসে বসে আমার নিজের টাকা গুনছিলাম।আমি সরকারি বিধি মোতাবেক বাইরে কোন ফি নেইনা।
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকতা আনোয়ারুল ইসলাম ব’লেন,বেশিরভাগ কাজ আমি নিজে করি।কিছু কাজ পিয়ন সুমন করেন।টাকা নেওয়ার অভিযোগ এই কর্মকতা অস্বীকার করেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা নাজির হোসেন বলেন,এই দু’জনের অনেক অপকর্মের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকতাকে জানালে তাদেরকে বদলীর আদেশ আসে।