রানা ইসলাম,বদরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরে বদরগঞ্জ উপজেলা অধিকাংশ জায়গায় ফসলি উর্বর কৃষি জমির টপ সয়েল মাটি কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে।আর এসব মাটি যাচ্ছে অধিকাংশ ইটভাটায়।মঙ্গলবার ২৪ডিসেম্বর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে দিনরাতে সমানতালে চলছে মাটি কাটার ধুম।মাটি পরিবহন কাজে ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসার সময় রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে।ফলে বর্ষা মৌসুমে জনসাধারণের হাঁটা অনুপযোগী হয়ে পড়ে।এছাড়াও জমির মাঝখানে থেকে মাটি কেটে নিয়ে আসার সময় সামনে জমি সর্বনাশ হচ্ছে।এতে অনেক জমিতে চাষাবাদ অনাবাদি হয়ে পড়ছে। সাময়িকভাবে আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় অনেক কৃষক তাদের আবাদি জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন।পরবর্তীতে ঐ জমিতে ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ার আশংকা করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, অঞ্চলের অধিকাংশ জমি উর্বর মাটি সমৃদ্ধ। এসব জমিতে বছরের দুটি মৌসুমে ধান,ভূটা,আলু,শীতকালীন সবজি ব্যপকভাবে উৎপাদন হয় কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এসব জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার উপজেলা দামোদরপুর ইউনিয়ন চম্পাতলী ঘাট এলাকা,মধুপুর ইউনিয়ন রাজরামপুর ঘাটিয়ালপাড়া গ্রামে,বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বকশিগঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে বিভিন্ন ট্রাক্টর, ড্রাম ট্রাকে লোড করা হচ্ছে। পরে সেগুলো পাশের ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ওসমানপুর খামারে ডাঙ্গা গ্রামের মুন্না বলেন,আবাদি জমির মাটি ভেকু দিয়ে দিনরাত কেটে নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসায় রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। রাস্তায় ধুলা বালিতে বাস করায় মুশকিল হয়ে পড়ছে।আমি উপজেলা প্রশাসন সুদৃষ্টি কামনা করছি মাটি কাটার বন্ধের জন্য।
আশরাফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের মাটি কাটা বন্ধ করতে বললে হুমকি দেয়।আমাদের ওসমানপুর খামারেডাঙ্গা রাস্তার বারোটা বেজে চলেছে। দেখার কেউ নেই।
মধুপুর ইউনিয়ন রাজরামপুর ঘাঁটিয়াল পাড়া গ্রামের মনা বলেন,আমাদের মধুপুর ইউনিয়ন আগে সবুজ ছিলো।এখন অতিরিক্ত ইটভাটার কারনে পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। তারপরও দিনরাতে কৃষি জমির মাটি ইটভাটা গিলে খাচ্ছে।তিনি আরো বলেন,ইটভাটার কারনে এই গ্রামে গাছের কোন ফল ধরছে না।ভাঁটায় গাড়ি যাওয়া আসাতে রাস্তার অবস্থা খুব ভয়াবহ দিকে যাচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মধুপুর ইউনিয়ন রাজরামপুর আরবিএল ইটভাটার মালিক আশরাফ আলী সাংবাদিককে বলেন,মাটি কি আকাশ থেকে আনবো ইট তৈরির জন্য। আপনি আমাদের ইটভাটা সমিতির সঙ্গে কথা বলেন।
আরবিএল স্টার ইটভাটার মালিক আলমগীর হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, মাটি তো সবাই কাটছে।তাদের বলেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকতা সেলিনা আফরোজা বলেন,টপ সয়েল জমির প্রান।জমির উপরের ৮থেকে ১০ ইঞ্চি হলো টপ সয়েল।টপ সয়েল মাটি কাটার পরে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যায়।যা পরবর্তীতে পূরন করতে সময় লাগে কয়েক বছর।
বদরগঞ্জ উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার মালিহা খানম বলেন,এবিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে সরজমিন যেয়ে জরিমানাও করা হয়েছে।খোঁজ নিয়ে অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।