আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট):
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উৎসবমুখর ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশের মধ্য দিয়ে মোংলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার (২৭ জুন) বিকাল ৪ টায় উপজেলার শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির কমিটির উদ্যোগে সুসজ্জিত রত্রযাত্রা পৌর শহর প্রদক্ষিণ করে। ঢাক-ঢোলসহ রথযাত্রায় বিভিন্ন বয়সী শত শত নারী-পুরুষ ভক্ত দেবতার নাম জপ, কীর্তনসহ পুজো অর্চনা পালন করেন।
ব্রাহ্মণমাঠ শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু হওয়া রথযাত্রা শেলাবুনিয়া গুগিচা মন্দিরে গিয়ে মন্দিরে গিয়ে মিলিত হয়। সেখানে টানা এক সপ্তাহ পূজা, অর্চনা, প্রতিদিন দুপুরে অন্নদান, সন্ধ্যায় ভগবত আলোচনাসহ প্রসাদ বিতরণ করা হবে।
রথটি শহরের শেহলাবুনিয়া গুগিচা মন্দিরে (জগন্নাথ দেবের মাসীর বাড়ি) ৭দিন থাকবে। আগামী ৫ জুলাই শনিবার রথের উল্টো টানের মধ্য দিয়ে সপ্তাহব্যাপী ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
সনাতন ধর্মীয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোন বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সেই লক্ষ্যে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় বলে জানন অফিসার ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান।এই রথ উৎসবে অংশ নেন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার সুমী, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান পরিবেশ কর্মী নুর আলম শেখ, সনাতন ধর্মাবলম্বীর পীযূষ কান্তি মজুমদার, থানা পুলিশের সদস্য সহ হাজারো ভক্ত।
উল্লেখ্য, হিন্দু তথা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবট হলেন জগতের নাথ বা জগতের ঈশ্বর। যিনি জগতের ঈশ্বর তার অনুগ্রহ ও কৃপা লাভ করলে মানুষের মুক্তি লাভ হবে। এ বিশ্বাস থেকেই জগন্নাথ দেবের মূর্তি নিয়ে রথযাত্রার আয়োজন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে আয়োজিত হয় এ উৎসব।
রথযাত্রার পুণ্য তিথিতে নিজ নিজ রথে প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্র শোভাযাত্রা সহকারে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে নিজ মন্দির থেকে সপ্তাহকালের জন্য মাসির বাড়ি গমন করেন। এই বেড়াতে যাওয়ার উৎসবই রথযাত্রা। রথযাত্রা হিন্দুধর্মের, বিশেষত প্রভু জগন্নাথের ভক্তদের কাছে একটি পুণ্য উৎসব এবং পুণ্য তিথিও। এই পুণ্য তিথিতে শ্রী জগন্নাথ ধাম পুরী ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে (যেখানে জগন্নাথদেবের ভক্ত বর্তমান) মহাসমারোহের সঙ্গে রথযাত্রা পালিত হয়। হিন্দুশাস্ত্র মতে রথের দড়ির স্পর্শে (দড়ি টানলে) পুণ্যলাভ হয়।