শিরোনাম:
রাজবাড়ী গোয়ালন্দে পবিত্র মহররম উপলক্ষে বাৎসরিক ইসলামি জলসা অনুষ্ঠিত খুলনা মহানগরীর নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যা বললো কেএমপি বাংলাদেশিদের গোল্ডেন ভিসা দেবে দুবাই মণিরামপুরে ৬ জন প্রতিবন্ধী পেলো হুইল চেয়ার মণিরামপুরে ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন নড়াইলে যোগদানকৃত টিআরসিদের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন করলেন এসপি এহসানুল কবীর নাসিরনগর ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফে দশ দিন ব্যাপী পবিত্র মহররম পালিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি গ্রেফতার ঝালকাঠি -১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা  বদরগঞ্জে পৃথক স্হানে নদীতে গোসল করতে নেমে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
সারাদেশে জেলা, উপজেলা ও ক্যাম্পাস প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে....। আগ্রহীগণ যোগাযোগ করুন:  01911179663

রহিম-সোহাগীর প্রেম : হার মেনেছে সিনেমার গল্প

Reporter Name / ৩২ Time View
Update : শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫

সুমন হোসেন, যশোর প্রতিনিধি:

লাইলি-মজনুর প্রেমের কথা আমরা গল্প-উপন্যাসে পড়েছি, সিনেমায় দেখেছি। কিন্তু বাস্তব জীবনেও যে এমন হৃদয়ছোঁয়া প্রেমের কাহিনি হয়, তারই যেন জ্বলন্ত প্রমাণ যশোরের কেশবপুরের সোগাগী দাস ও তার স্বামী আব্দুর রহিম।
প্রেমের গল্প শুরু হয়েছিল দুই বছর আগে। কেশবপুরের সাতবাড়িয়া গ্রামের যুবক আব্দুর রহিমের সঙ্গে পরিচয় হয় একই উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের এক তরুণী সোহাগী দাসের। প্রথমে গোপনে কথা, তারপর একে অন্যকে না দেখলে দিন কাটতো না তাদের। ধীরে ধীরে তারা মনের বন্ধনে বাধা পড়েন। কিন্তু তাদের পথ মোটেও সহজ ছিল না। ধর্মের পার্থক্য, সামাজিক চাপ, পরিবার-প্রতিবেশীর আপত্তি সব যেন তাদের প্রেমকে বারবার বিপন্ন করে তোলে।
তবুও ভালোবাসা মানে না কোনো ধর্ম, জাত কিংবা বাধা। তাই গত ২৩ জুন সবকিছু ত্যাগ করে প্রেমিক রহিমের হাত ধরে পালিয়ে যান সোহাগী। হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। নাম নেন আয়েশা খাতুন। যশোরের কুয়াদা গ্রামে এক আত্মীয়ের আশ্রয়ে শুরু করেন নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখা।
কিন্তু সমাজ ও পরিবারের চোখ এড়িয়ে প্রেম টিকিয়ে রাখা সহজ নয়। ২৪ জুন আয়েশার বাবা পরিমল দাস থানায় জিডি করে পুলিশ নিয়ে গিয়ে মেয়েকে জোরপূর্বক নিয়ে আসার চেষ্টা করেন । এই জীবনযুদ্ধে আয়েশা যেন একা। পুরো গ্রামবাসী পাশে দাড়ায় আয়শার। এমন অবস্থায় বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে আয়েশা বিষপান করেন। তবে ভাগ্য এখানেও তাদের পক্ষে ছিল। যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসায় প্রাণ ফিরে পান আয়েশা। তাকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয় বাবার বাড়িতে।
এই সময় রহিম থেমে থাকেননি। ঘুরতে থাকেন দ্বারে দ্বারে। স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার লড়াই শুরু করেন আইনের পথে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন, সহায়তা চান মানবাধিকার উন্নয়ন উদ্যোগ ফাউন্ডেশনেরও। আদালত নির্দেশ দেয় আয়েশাকে হাজিরের। অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনের নোটিশে চাপের মুখে অবশেষে বৃহস্পতিবার আয়েশার পরিবার বাধ্য হয় মেয়েকে মুক্তি দিতে।এভাবেই বৃহস্পতিবার আয়েশা আবার ফিরে যান স্বামীর কাছে। যশোরে নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে আয়েশা ঘোষণা দেন তিনি স্বেচ্ছায়, ভালোবেসে, নিজের ইচ্ছায় তার স্বামী আব্দুর রহিমের সঙ্গে জীবন কাটাতে চান।ঠিক সেই মুহূর্তে উপস্থিত মানুষজন যেন সিনেমার এক পরিণতি দেখছিলেন চোখের সামনে। করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে চারদিক। কেউ চোখ মুছেন, কেউ বলেন ভালোবাসা কখনো হার মানে না।
রহিমের আইনজীবী রুহিন বালুজ বলেন, প্রেম নিয়ে অনেক মামলা দেখি, কিন্তু আয়েশা ও রহিমের সম্পর্ক ছিল অন্যরকম। আয়েশা শুধু ধর্ম ত্যাগ করেননি, ভালোবাসার মানুষকে না পেয়ে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছিলেন। অথচ সেই মৃত্যুও যেন ভালোবাসাকে থামাতে পারেনি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category