শাহাদাত হোসেন নোবেল,খুলনা: খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গণসমাবেশে জড়ো হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে নগরের শিববাড়ী মোড়ে আসতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হাজারো শিক্ষার্থী ও জনতা সমাবেশস্থলে জড়ো হন। তাঁরা সরকারের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিচ্ছেন।
এদিকে আটকে দেওয়া হয়েছে শিববাড়ি মোড়ের চারদিকের চলাচলের পথ। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
ফেসবুক লিংক দেখুন https://www.facebook.com/profile.php?id=61561797107011&mibextid=ZbWKwL
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির সমর্থনে আজ দুপুর ১২টার দিকে কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐক্য। সংগঠনটির পক্ষে আইনজীবী কুদরত ই খুদা এ তথ্য জানান। এ ছাড়া খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি দুপুর আড়াইটায় কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংহতি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।
অদূরে নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীদেরও সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে। বিক্ষোভে নগরের শিববাড়ী চত্বর থেকে বিভিন্ন স্থানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে সমাবেশস্থলের আশপাশে বিজিবির কয়েকটি গাড়ি থাকলেও পুলিশের অবস্থান দেখা যায়নি।
এদিকে রোববার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা মহানগরে ডাকবাংলো শঙ্খমার্কেট এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের জেলা কার্যালয়টিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিন সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল-সমাবেশ করছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময পিকচার প্যালেস মোড় থেকে আন্দোলনকারীরা যেতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও আগুন দেয়। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা জেলা পরিষদে হামলা করে।
এ সময জেলা পরিষদের সামনের রাখা যমুনা টিভির সাংবাদিক প্রবীর বিশ্বাসের মোটরসাইকেলসহ পাঁচটি মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগ করে। পরে তারা প্রেসক্লাবে হামলা করে।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহ জালাল সুজন ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ মো. আবু হানিফ, জেলা যুবলীগের সভাপতি চৌধুরী রায়হান ফরিদ ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট কণিকা সাহা
ইতোপূর্বে শিববাড়ি মোড়ের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর চত্বর ঘোষণা করতে চেয়েছিল খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)। এতে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার জন্ম হয়।
ইউটিউব লিংক দেখুন https://www.youtube.com/@ebnews24
খুলনার শিববাড়ি মোড়ের নাম বদলে শহীদ মীর মুগ্ধ চত্বর ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ (রোববার) বেলা দুইটার দিকে শিববাড়ি মোড়ের সৌন্দর্য বর্ধক স্তম্ভের উপরে তারা এই নাম ফলক জুড়ে দিয়ে নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দেন।
মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখান থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করে গত মার্চে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর গত মার্চে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) এমবিএতে ভর্তি হন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে গত ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান তিনি।
খুলনায় দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল সারা দিন । দূরপাল্লার পরিবহনের কাউন্টার সবই বন্ধ বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ডিউটিতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। এই মুহূর্তে কোনো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে ডিউটি করা হচ্ছে না। তবে মোটরসাইকেল ও পুলিশ ভ্যানে করে টহলে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।