রানা ইসলাম,বদরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধি: রংপুরের বদরগঞ্জে মোছা আঞ্জুয়ারা (৩৮) নামে এক গৃহবধূর হত্যার ১৮ দিন পর প্রধান আসামী রশিদুল হককে ঢাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ।। সোমবার ৪নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে ঢাকার উত্তরা তাকে আটক করে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক(এসআই) হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আতিক হোসেন ও তার সঙ্গীয় ফোর্স। গত ১৮ অক্টোবর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শিবপুর দারারপাড় গ্রাম থেকে গৃহবধূ আন্জুয়ারা বেগমের খাটের নিচ থেকে বস্তুাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে থেকে তার স্বামী পলাতক ছিল। আঞ্জুয়ারা উপজেলা দারারপাড় গ্রামের রশিদুল ইসলামের স্ত্রী ছিলেন।এঘটনায় নিহত গৃহবধূর চাচা মশিয়ার রহমান বাদী হয়ে রশিদুল হককে প্রধান করে ৬জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে প্রায় ১৭বছর আগে রংপুর সদরের ঈশ্বরপুর এলাকার মোকলেছুর রহমানের মেয়ে আন্জুয়ারা বেগমের সঙ্গে বদরগঞ্জ গোপালপুর ইউনিয়ন দা্রারপাড় গ্রামের রশিদুলের সঙ্গে বিয়ে।আন্জুয়ারা পিতা মোকলেছুর রহমান মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ের সময় রশিদুল কে নগদ টাকা দেন।বিয়ের কয়েকবছর পর রশিদুল মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়েন।নিজে মাদক বিক্রি করতেন।আন্জুয়ারা কোলজুড়ে পরপর দুটি ছেলে সন্তান হয়।
নিহত আন্জুয়ারা চাচা মশিয়ার রহমান বলেন,আমার এতিম ভাতিজীকে যৌতুকের টাকার জন্য সবসময় চাপ দিতেন ঘাতক রশিদুল।আমি পাষন্ড রশিদুলের ফাঁসি চাই সরকারের নিকট।
ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন,গত ২০-২২ দিন আগে মারধর করার কারণে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যান আঞ্জুয়ারা।পরে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে আবারো বাড়িতে নিয়ে আসেন স্ত্রী আঞ্জুয়ারা কে। দু তিনদিন থেকে আবারও তার স্ত্রীকে মারধর করে। গতকালও তার স্ত্রী কে মারধর করেছে। সেই মারধরের কারণে আঞ্জুয়ারা মারা গিয়েছে।
পরে মরদেহ বস্তার ভিতর ঢুকিয়ে ঘরের বাক্সের মধ্যে ভোর পর্যন্ত রেখে দেন পাষন্ড স্বামী রশিদুল। ভোরের দিকে স্বামী রশিদুল বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে বদরগঞ্জ থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের ভেতর বাক্স থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। স্বামী রাশিদুল পালিয়ে যায়।
ঐ গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি বলেন,রশিদুল নেশা বিক্রি করতেন।নিজেও নেশা করতেন।সবসময় তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতেন।এবং মারধর করতেন। আমরা গ্রামবাসী রশিদুল ফাঁসি চাই।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম বলেন, আন্জুয়ারা বেগম একজন ভাল মনের মানুষ ছিল। তার স্বামী কারনে অকারণে তাকে নির্যাতন করতো।আমি কয়েকবার সালিস করে সমাধান করে দিয়েছি।তিনি আরো বলেন,আমি এলাকাবাসীকে বলেছি ঘাতক রশিদুলকে যেখানে পাওয়া যাবে তাকে ধরে পুলিশে দেওয়ার জন্য।
বদরগঞ্জ থানাার এসআই আতিক বলেন,১৮দিন পর তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যমে রশিদুল কে ঢাকার উত্তরা থেকে আটক করি।তিনি সেখানে নির্মাধীন ভবনে শ্রমিক কাজ করছিলেন।তাকে রংপুর জেল হাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।